প্রকাশিত:
৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

তদন্তকারী সংস্থাগুলো নিশ্চিত করছে, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক কার্টেলগুলো। জলিস্কো রাজ্য দীর্ঘদিন ধরে ‘জলিস্কো নিউ জেনারেশন কার্টেল’-এর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ভূ-রাজনৈতিক থিংক ট্যাঙ্ক ‘স্ট্র্যাটফর’ এই কার্টেলকে দেশটির সবচেয়ে সহিংস অপরাধী নেটওয়ার্ক হিসেবে উল্লেখ করেছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।
মেক্সিকোতে বর্তমানে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ, যাদের বড় অংশই সাবেক প্রেসিডেন্ট ফেলিপে ক্যালদেরনের শুরু করা ‘ড্রাগ যুদ্ধ’-পরবর্তী সময়ে হারিয়ে গেছেন। শুধু জলিস্কোতেই এই গুমের সংখ্যা সবচেয়ে ভয়াবহ। ন্যাশনাল সার্চ কমিশনের তথ্যমতে, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে রাজ্যটিতে নিখোঁজ হয়েছেন ৭,৩৭৬ জন; ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৯,৫৯৩–এ। অপরাধ প্রবণতার দিক থেকে দেশটির সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রাজ্যগুলোর মধ্যে জলিস্কো এখন শীর্ষে।
চলতি বছরের শুরুতেও হাজারো মানুষ নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে উদ্বেগ বাড়ছে আক্রন স্টেডিয়ামকে ঘিরে, যেখানে বিশ্বকাপের মূলপর্বের চারটি ম্যাচ হওয়ার কথা। তার আগে আগামী মার্চেই এখানে অনুষ্ঠিত হবে ইন্টার-কনফেডারেশন প্লে-অফ, নিউ ক্যালেডোনিয়া বনাম জ্যামাইকা, আর বিজয়ী দলের প্রতিপক্ষ ডিআর কঙ্গো।
কার্টেলদের তীব্র দাপটে বিপর্যস্ত এই এলাকায় আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো কতটা নির্বিঘ্নে আয়োজন করা যাবে, এখন সেটিই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। তবে তদন্ত ও নিরাপত্তা–দায়িত্বশীলরা আশ্বস্ত করে বলেছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে জোরদার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত ৩ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা, আর্মার্ড গাড়ি, মেটাল ডিটেক্টর এবং ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন।
এখন দেখার বিষয়, অপরাধের অন্ধকার ছায়ায় ঢাকা এই অঞ্চলে ফিফা এবং স্থানীয় প্রশাসন কতটা নিরাপদে বিশ্বকাপের উৎসব ফুটিয়ে তুলতে পারে।